সাভার – প্রতিনিধি:
আশুলিয়ায় বাঁশঝাড়ে থেকে ওড়না পেঁচানো অজ্ঞাত তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মূলহোতা সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল। সেই সাথে মরদেহের পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে।
এরআগে, শনিবার (১২ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলার কাশিমপুর থানার মাটি মসজিদ এলাকার রাসেলের বাড়ি থেকে তাদেরকে আটক করা হয়
রবিবার (১৩ জুন) দুপুরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১, সিপিসি-২ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মোর্শেদুল হাসান।
আটককৃতরা হলো- মোঃ জুয়েল (৩০), মোঃ রফিক (৫৭) ও মোঃ বাচ্চু মিয়া (২৯)। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। এদের মধ্যে মোঃ জুয়েল (৩০) নিহতের সাবেক স্বামী বলে জানা যায়।
র্যাব জানায়, এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব।
সেই ধারাবাহিকতায় ১২ জুন রাতে র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল কাশিমপুরের মাটির মসজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মূলহোতা নিহতের সাবেক স্বামী জুয়েল ও রফিক কে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ি অভিযান চালিয়ে বাচ্চু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
নিহতের নাম- লাখি আক্তার (২৯)। সে আশুলিয়ার গোয়াইলবাড়ি কোনাপাড়া এলাকার মজিবর রহমানের মেয়ে।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানায়, মূলহোতা জুয়েল একজন মাদকসেবী, সে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথেও জড়িত ছিল। সে নিহত লাখি আক্তারের সাবেক স্বামী। সে বিভিন্ন সময় নিহত লাখি আক্তারের উপর শারীরিক নির্যাতন চালাত। পরবর্তীতে বিগত ০৪ বছর পূর্বে লাখি আক্তারের সাথে তার তালাক হয়। তালাকের পরে লাখিকে আবারও স্ত্রী হিসেবে নিতে চায় সে। পরিবারের কেউ দিতে রাজি না হলে সে লাখি আক্তারকে হত্যার হুমকি দেয়। পরবর্তী সময়ে গত ০২ মে সিঙ্গাপুর প্রবাসীর সাথে লাখি আক্তারের বিয়ে হয়। তার বিয়ের কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে সংসার করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে গত ০৮ জুন বাচ্চু মিয়া বিভিন্ন ধরনের প্ররোচনা দিয়ে কৌশলে নিহত লাখি আক্তারকে আশুলিয়ার সুবন্দী এলাকায় জুয়েলের বাড়ির পাশে একটি বাগানের ভিতর নিয়ে যায় এবং পূর্ব পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে।
এ ব্যাপরে র্যাব-১, সিপিসি-২ এর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মোর্শেদুল হাসান বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই সাথে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রসঙ্গত যে, গত বুধবার (৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে আশুলিয়ার সুবন্দি এলাকার একটি বাঁশঝাড়ের ভিতর থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অজ্ঞাত তরুণীর (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।